Bangladesh Hosiery Association

hosieryassociation@gmail.com

+8801777432623

Hosiery Industry in Bangladesh

বাংলাদেশে হোসিয়ারী শিল্প

হোসিয়ারী শিল্পের সারসংক্ষেপঃ- ১। হোসিয়ারী শিল্পের ইতিহাসঃ ১৪৮১ ইং সনে নিটিং বা বুনন কাজ যান্ত্রিকভাবে উৎপাদিত হয় লন্ডনে। ব্রিটিশ আমলের সময় বাংলাদেশের শিল্প কারখানাগুলো কলিকাতা কেন্দ্রিক হিসেবে বিস্তার লাভ করেছিল। তখন পূর্ব বাংলার একমাত্র নদীবন্দর হিসেবে পাট ব্যবসা কেন্দ্র ও পাটকল স্থাপনের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের গুরূত্ব বাড়তে থাকে। এ শিল্প অঞ্চলের বিস্তৃতি লাভের এক পর্যায়ে ১৯১৬ইং সনে ”হংস হোসিয়ারী” নামে প্রথম হোসিয়ারী কারখানা স্থাপিত হয়। ১৯৪৭ইং সনে পাকিস্তান স্বাধীনতার প্রাক্কালে এ দেশে হোসিয়ারী পণ্যের চরম ঘাটতির কারণে ব্যক্তিগত ও বেসরকারী পর্যায়ে সরকারী সাহায্য ব্যতিরেকে ১৯৫০ইং সনে নারায়ণগঞ্জে হোসিয়ারী শিল্প গড়ে উঠতে থাকে এবং মুলতঃ তখন থেকেই নারায়ণগঞ্জে হোসিয়ারী শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটে। হোসিয়ারী শিল্প বস্ত্র উপখাত ভিত্তিক কুটির শিল্পের আওতাভ‚ক্ত। কারণ এ শিল্পে পুঁজি বিনিয়োগের পরিমাণ ও নিয়োজিত শ্রমিকদের সংখ্যা নিতান্তই কম। যা বৃহৎ শিল্পের আওতার মধ্যে পরিগনিত করা যায় না। এ শিল্পে উৎপাদিত পণ্য গেঞ্জি, জাইংগা, মোজা, মাফলার, টুপি, সুয়েটার সহ নানাবিধ পণ্য সহজ ও সুলভ মল্যে খোলা বাজারে বিক্রি হওয়ায় সর্বস্তরের জনগন ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে থাকে। বর্তমানে আভ্যন্তরীণ বাজারে হোসিয়ারী উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় হোসিয়ারী শিল্পের অস্তিত্ব বিকশিত ও স¤প্রসারিত হচ্ছে। ২। নারায়ণগঞ্জে হোসিয়ারী শিল্প ঃ (ক) নারায়ণগঞ্জ জেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যা নদীর প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হওয়ার কারণ প্রাকৃতিক প্রদত্ত মৃদু পানি ও ভ‚-গর্ভস্থ পানি (যে পানিতে আয়রন ও খনিজ পদার্থের ভাগ কম)। (খ) তৎকালীণ স্থানীয় ঢাকেশ্বরী, লক্ষীনারায়ণ, চিত্তরঞ্জন ইত্যাদি সুতার মিলগুলো হতে সহজে সুতা প্রাপ্তি। (গ) দেশের অন্যতম সুতার ব্যবসা নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত ছিল। (ঘ) তৎকালীণ প্রধান নৌ-বন্দর ও রেলওয়ে ষ্টেশন নারায়ণগঞ্জে ছিল। ৩। হোসিয়ারী শিল্পের টেকনোলজীঃ দু’প্রকার প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের কাপড় তৈরী হয়ে থাকে। (১) উইভিং (২) নিটিং। হোসিয়ারী শিল্পে নিটিং টেকনোলজী বা বুনন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। নিটিং প্রযুক্তি ৩ প্রকারঃ- (ক) সার্কুলার নিটিং (খ) ফ্ল্যাট নিটিং (গ) ওয়ার্প নিটিং। (ক) সার্কুলার নিটিং মেশিনে গেঞ্জি, মোজা, মাফলার, জাইঙ্গা ইত্যাদি তৈরী হয়ে থাকে। (খ) ফ্ল্যাট নিটিং মেশিনে উলেন জা¤পার, সুয়েটার সহ নানাবিধ শীতকালীণ বস্ত্র তৈরী হয়ে থাকে। (গ) ওয়ার্প নিটিং মেশিনে মশারী কাপড় তৈরী হয়ে থাকে। উলে­খ্য যে, উইভিং প্রযুক্তিতে উৎপাদিত কাপড়ে কোন ইলাষ্টিসিটি (নমুনীয় স্থিতিস্থাপককতা) হয় না। যেমনঃ- গামছা, লুঙ্গী, কাপড় ইত্যাদি। অন্যদিকে নিটিং মেশিনে প্রস্তুতকৃত কাপড়ে (স্থিতিস্থাপকতা) হয়ে থাকে। ৪। হোসিয়ারী পণ্য উৎপাদনেরঃ হোসিয়ারী শিল্পটি আমদানি নির্ভর থাকা স্বত্বেও বর্তমানে স্থানীয় ভাবে প্রক্রিয়া। পশ্চাৎপথ শিল্প স্থাপনের ফলে আমদানি নির্ভরশীলতা পূর্বের চেয়ে অনেক কম। হোসিয়ারী পণ্য উৎপাদনের বেলায় সার্কুলার মেশিন, সুই, সিংকার, সুতা, পলিব্যাগ, কার্ড বোর্ড, হার্ড বোর্ড, জিপার, ইলাষ্ট্রিক ও বুতাম ইত্যাদি কাঁচামাল বিশেষভাবে প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ব্যবহারের মাধ্যমে প্রথমে সুতা নিটিং গ্রে-ফেব্রিক্স ধোলাই/রং ব্লিচ ফেব্রিক্স কাটিং সুইং আয়রণ পলিব্যাগ বাক্স ব্যবহারের মাধ্যমে ফিনিসড্ গুডস্ হিসেবে বিভিন্ন প্রক্রিয়া অবলম্বন করে পাইকারী ও খুচরা হিসেবে হোসিয়ারী পণ্য বাজারজাত করা হয়। ৫। হোসিয়ারী এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠাঃ ১৯৫২ ইং সনের ১৩ এপ্রিল ইষ্ট পাকিস্তান হোসিয়ারী ইন্ডাষ্ট্রিয়াল এসোসিয়েশন নামে কার্যকাল আরম্ভ হয়। ১৯৬১ইং সনে তৎকালীণ সরকার ট্রেড অর্গানাইজেশন জারী করার ফলে পাকিস্তান ভিত্তিক শিল্প ও বাণিজ্য সংগঠন নামে পাকিস্তান হোসিয়ারী ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশন জন্ম নেয়। ১৯৬৫ইং সন হতে হোসিয়ারী শিল্প উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি লাভ করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ ইং সনে বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরবর্তীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হতে ২২শে জানুয়ারী ১৯৭৬ইং তারিখে নং-১(২২)/৭৩ টি.ও এর পত্রের অনুক‚লে ১৯১৩ ইং সনের কো¤পানী আইনের অধীনে ১৬ ফেব্রুয়ারী ১৯৭৬ইং সনে রেজিষ্ট্রেশন লাভ করে (টি.ও নং-৯৯/৭৫ এর ১৯৭৫-১৯৭৬)। এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন- জনাব আবুল বাশার সিদ্দিকুর রহমান। হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের জন্মলগ্নে প্রায় ৭৫ হতে ১০০ জন সদস্য ছিল। (২) বর্তমানে হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩০০০। তার মধ্যে এসোসিয়েট গ্রƒপে ১৮০০ এবং সাধারন গ্রƒপে ১২০০ প্রতিষ্ঠান নিয়ে এসোসিয়েশনের কার্য্যক্রম বর্তমানে চালু আছে। এ শিল্প ইউনিটগুলো নারায়ণগঞ্জের উকিলপাড়া, নয়ামাটি, দেওভোগ, টানবাজার, হাজিগঞ্জ, বিসিক হোসিয়ারী শিল্প এলাকা, ডেমরা, সাভার ও গাজীপুর এলাকায় অবস্থিত। ৬। হোসিয়ারী এসোসিয়েশনেরঃ (ক) হোসিয়ারী ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করা, সংগঠিত করা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। উৎপাদনে উৎসাহিত করা, দ্রব্যের মাণ উন্নয়ন ও সর্বোপরি বাজারসৃষ্টি করা। (খ) হোসিয়ারী শিল্প স¤পর্কিত পরিসংখ্যক তথ্য সংগ্রহ ও প্রচার করা। (গ) সদস্যগণের মধ্যে মত পার্থক্য ও বিরোধীতা দেখা দিলে তাহা মিল করা ও সমন্বয় সাধন করা। (ঘ) সদস্যদেরকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, খুচরা- যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য সহযোগী যন্ত্রাংশ পেতে সহযোগীতা করা। (ঙ) সরকারের পক্ষে এবং ব্যবসা ও শিল্প সংক্রান্ত প্রতিনিধির পক্ষে এসোসিয়েশন হতে পর্যাপ্ত প্রতিনিধি নিশ্চিত করা। (চ) বিভিন্ন অনুমোদিত চেম্বার ও এসোসিয়েশনের সহিত সহযোগী হওয়া। (ছ) ব্যবসা বাণিজ্য ও শিল্প স¤পর্কে বিদেশে অনুষ্ঠিত সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ্ বা সম্মেলনে প্রতিনিধি বা পর্যবেক্ষক প্রেরন। (জ) ব্যবসা বাণিজ্য ও শিল্প স¤পর্কিত নীতি প্রনয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান। (ঝ) ব্যবসা বাণিজ্য ও শিল্প সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন মতামত সরকারের নিকট পেশ করা। ৭। হোসিয়ারী শিল্পের সমস্যাঃ (১) সুষ্ঠ ও স্বচছভাবে হোসিয়ারী ব্যবসা পচিালনার জন্য ক্ষুদ্র ও সমাধান ক্ষুদ্র ও স্বল্প পঁজি স¤পন্ন হোসিয়ারী মালিকদের মধ্যে এসোসিয়েশনের সুপারিশ অনুযায়ী সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা। ১৯৮৮ইং সনে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এসোসিয়েশনের সুপািিরশে ঋণ প্রদান করা হয়েছিল। (২) বিসিক হোসিয়ারী শিল্পনগরী প্রকল্পে স্থাপিত এবং বিভিন্ন স্থানে চালু ইউনিটগুলোর বাস্তবতা যাচাই করে এসোসিয়ে- -শনের সুপারিশ অনুযায়ী প্রকল্প ঋণের ব্যবস্থা গ্রহন। (৩) সুই ও খুচরা যন্ত্রাংশ আমাদের দেশে তৈরী হয় না। এগুলো শুধুমাত্র ব্যবহারের উদ্দেশ্যে আমদানি করতে হয়। প্রয়োজনীয় কাঁচামাল হিসেবে সই ও খুচরা যন্ত্রাংশ ব্যবহার এর লক্ষ্যে কম আমদানি শুল্কে আমদানির ব্যবস্থা করা। ৮। হোসিয়ারী শিল্পে নিয়োজিত ঃ শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে সুষ্ঠু স¤পর্ক ও সহযোগীতা দ্রƒত শিল্পায়নের শ্রমিকদের কল্যানে এসোসিয়ে- পূর্ব শর্ত। তাই শিল্পে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে আমরা দুটো বিষয়ের শনের ভ‚মিকা কি ? প্রতি গুরূত্ব দিয়ে থাকি। প্রথমতঃ বিরোধ ঘটতে না দেওয়া। দ্বিতীয়টি বিরোধ নি¯পত্তি করা। হোসিয়ারী শিল্পে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তার উন্নতি সাধন, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, উৎপাদনের ব্যয় হ্রাস ও অবচয় রোধ, পণ্যের মান-উন্নযণ ইত্যাদি বিষয়গুলোর প্রতি গুরূত্ব আরোপ করে ১৯৬৯ সনের শিল্প স¤পর্ক অধ্যাদেশ অনুযায়ী বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন + মালিক + আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর + শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে যাবতীয় সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহন করে থাকে এবং এসোসিয়েশন এর জন্মলগ্ন থেকে মালিক ও শ্রমিকদের সালিশী বিরোধের মিমাংসা করে আসছে। ৯। জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নেঃ হোসিয়ারী শিল্পের উন্নতি, গতিশীল উৎপাদন তথা জাতীয় অর্থনৈতিক হোসিয়ারী শিল্পের অবদান। উন্নয়ন এবং জনসাধারণের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন সাধনে এ শিল্প গুরূত্বপুর্ণ ভ‚মিকা পালন করে আসছে। কারণ পুঁজি বিনিয়োগ এবং প্রচুর কর্মসংস্থানের স¤ভাবনা এ শিল্পে রয়েছে। তা ছাড়া বর্তমান সরকারের নীতি হলো রপ্তানি বৃদ্ধি করে আমদানি ব্যয় হ্রাস করা। রপ্তানি পরিমাণ বৃদ্ধি হলে জনসাধারণের মাথাপিচু আয় বৃদ্ধি পাবে এবং অন্যদিকে মাথাপিচু আয় বৃদ্ধি পেলে দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো মজবুত হবে। তার পাশাপাশি জনসাধারণের জীবন যাত্রার মাণও উন্নত হবে। রাষ্ট্রীয় ও অর্থনৈতিক তথা দেশের আপামর জনসাধারণের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে হোসিয়ারী শিল্প তদানিন্তন পর্ব পাকি¯ান আমল হতে গুরূত্বপর্ন ভ‚মিকা পালন করে আসছে। (৩) ১০। রপ্তানি কার্য্যক্রম কিভাবে এবং ঃ ১৯৫০ দশকে কোনরূপ সরকারী সাহায্য ছাড়াই হোসিয়ারী প্রতিষ্ঠান- কখন থেকে শুরু হয়েছিল। গুলো স্থানীয় বাজারভিত্তিক হোসিয়ারী পণ্য উৎপাদন করে আভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাত। দেশ বিভাগের পূর্বে ১৯৬৯ ইং সনে হোসিয়ারী পণ্য বিদেশে রপ্তানি হয়। সম্ভাবনাময় এ শিল্পকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে সরকার উদার শিল্প-নীতির প্রবর্তন করেন। সরকারের উদার শিল্পনীতির প্রবর্তনের ফলে ফ্রি সেক্টরের আওতায় বস্ত্র উপখাতে স্থানীয় বাজারভিত্তিক অনেক হোসিয়ারী প্রতিষ্ঠান ১৯৮৬ইং রপ্তানি বাজারে প্রবেশ করে। মলতঃ ১৯৮৮ইং সন হতে বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন রপ্তানীমুখী হোসিয়ারী ইউনিটগুলোর অনুক‚লে বন্ডেড ওয়্যার হাউজ এর আওতায় শুল্ক মুক্তভাবে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানির লক্ষ্যে ইউ’পি, ইউ’ডি সহ যাবতীয় সুপারিশ কার্য্যক্রম চালু করে এবং এ কার্য্যক্রম ১৯৯৩ইং পর্যš চালু অবস্থায় ছিল। পরবর্তীতে ১৯৯৬ইং সনে রপ্তানীমুখী নীট ইউনিট-গুলোর সংগঠন বিকেএমইএ স্থাপিত হওয়ার পর বিকেএমইএ রপ্তানী যাবতীয় কার্য্যক্রম চালু রাখার পদক্ষেপ গ্রহন করেন। হোসিয়ারী উৎপাদিত পণ্য রপ্তানী বাণিজ্যে উলে­খযোগ্য ভ‚মিকা পালনের লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১৯/০৭/১৯৯০ইং তারিখে ১৯৮৯-৯১ইং দ্বি-বার্ষিক রপ্তানী নীতির আওতায় ১৯৯০-৯১ইং অর্থ বছরে ”হোসিয়ারী দ্রব্য” শিরো-নামে পৃথক খাত সৃষ্টি করে সর্বপ্রথম ১৬ মিলিয়ন মাঃ ডঃ মল্যের রপ্তানী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন। খাত ভিত্তিক রপ্তানী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করার পর রপ্তানী বাজারে হোসিয়ারী দ্রব্যের (নীট পোষাক) চাহিদা বিদেশে উত্তরোত্তর বৃদ্ধির ফলে ক্রমাগতভাবে রপ্তানীর পরিমান বৃদ্ধি হতে থাকে। বর্তমানে ১০০% নীট পোষাক পস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সমন¦য়ে ১৯৯৬ইং সনে বাংলাদেশ ভিত্তিক ১০০% ভাগ নীট পোষাক প্র¯তুতকারী প্রতিষ্ঠান সমুহের প্রতিনিধিত্ত¡কারী বাণিজ্য সংগঠন বিকেএমইএ গঠন হওয়ার পর নীট খাতে উক্ত বাণিজ্য সংগঠন রপ্তানি কার্য্যক্রম ক্রমাগতভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। হোসিয়ারী পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে খাত ভিত্তিক এ শিল্পটি বলিষ্ট ভ‚মিকা পালন করে যাচেছ। ১১। হোসিয়ারী শিল্পনগরী প্রকল্পেরঃ হোসিয়ারী শিল্পনগরী ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন মূল উদ্দেশ্য প্রকল্পের একটি উপ-প্রকল্প। সমকালের প্রতিযোগীতামলক বাজার অর্থ- নীতির প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় রেখে হোসিয়ারী শিল্পকে নির্দ্দিষ্ট স্থানে স্থানান্তরিত করে পণ্যের গুনগতমাণ উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিযোগীতা সৃষ্টি এবং পণ্যের মাণওয়ারী মল্যের স্থিতি রক্ষায় এবং অবকাঠামোগত সুবিধাদি প্রদানের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার পথ সুদৃঢ় ও সুগম করাই এ প্রকল্পের মল উদ্দেশ্য। শিল্প অর্ধুষিত নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছোট ছোট হোসিয়ারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটি নির্দ্দিষ্ট জায়গায় একত্র করে এবং রপ্তানি বাণিজ্য সুষ্ঠভাবে স¤পাদনের লক্ষ্যে বিভিন্ন শিল্প ইউনিট স্থাপনের জন্য নারায়ণগঞ্জস্থ ফতুল­া থানাধীন হরিহরপাড়া মৌজায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্দ্যোগে এবং বিসিক ও বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের যৌথ প্রচেষ্টায় ৫৮.৫২ একর জমির মধ্যে ৭১৪টি প্লট বরাদ্দ করে ’’মনোটাইপ’’ বিসিক হোসিয়ারী শিল্পনগরী স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। বর্তমানে উক্ত প্রকল্পটি সরকারী পর্যায়ে একটি সফল প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ১২। বিসিক হোসিয়ারী শিল্পনগরীঃ তাঁত ও পাট শিল্পের অ¯িতত্ব বিলোপ হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জে হোসিয়ারী কিভাবে গড়ে উঠেছে এবং শিল্পের কার্য্যক্রম বর্তমানে অব্যাহত আছে। ক্রমবিকাশমান হোসিয়ারী- এর অবস্থান কি। শিল্পের অস্তিত্বের কথা বিবেচনা করে নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত ভাবে গড়ে উঠা হোসিয়ারী শিল্প ইউনিটগুলোকে একটি বিশেষ জায়গায় কেন্দ্রিভুত করে পুর্নবাসন ও নতন হোসিয়ারী কারখানা স্থাপন করে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে ১৯৮৫ইং সনে স¤পর্ন নতন আঙ্গীকে মনোটাইপ শিল্পনগরী স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তু অনুযায়ী বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন জমির মুল্য প্রদান করবেন এবং অন্যদিকে শিল্প মন্ত্রণালয় সাবÐসিডি হিসেবে উক্ত প্রকল্পে শিল্প ইউনিট নির্মানের উপযোগী সব ধরনের অবকাঠামো উন্নয়নে অর্থ ব্যয় করবেন। হোসিয়ারী শিল্পের স¤প্রসারণ এবং সহজ ও সুলভ মল্যে উৎপাদিত পণ্য বহুমুখীকরণ, বাজারজাতকরণ এবং অর্থনৈতিক অবকাঠামো উন্নয়ন সহ কর্মসংস্থানের পথ সুগম সর্বোপরি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়, বিসিক ও বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের যৌথ উদ্দ্যোগে ১৯৯০ইং সনে নারায়ণগঞ্জস্থ হরিহরপাড়া মৌজায় ৫৮.৫২ একর জায়গা অধিগ্রহন করা হয়। অধিগ্রহনের মল্য বাবদ ২ কোটি ৬৪ লক্ষ ৩৮ হাজার ৯৮২ টাকা ৩৮ পয়সা হোসিয়ারী এসোসিয়েশন বিসিককে প্রদান করেন। পরবর্তীতে গত ০৭/৫/৯০ইং তারিখে অতিরিক্ত ভূমি হুকুম দখল অফিস, নারায়ণগঞ্জ ১৯৮২ইং সনের স্থাবর স¤পত্তি হুকুম দখল ও রিকুইজিশন (অধ্যাদেশÐ ১৯৮২ইং সনের ২নং অধ্যাদেশ এর অধীন অধিগ্রহনকৃত ৫৮.৫২ একর জায়গা বিসিকের বরাবরে বুঝিয়ে দেন। উক্ত প্রকল্পে ৩ কাঠার ৫২৮টি এবং ৫ কাঠার ১৮৬টি সর্বমোট ৭১৪টি প্লট বরাদ্দ প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহন করার পর বিসিক কর্তৃক নির্ধারিত ৭১৪টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে শিল্পনগরীতে প্রায় দুই লক্ষ শ্রমিক কর্মচারী নিয়োজিত আছে এবং বছরে প্রায় পনর হাজার কোটি টাকা মুল্যের উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানী হচ্ছে। (৪) ১৩। শিল্পনগরী প্রকল্পে সমস্যাঃ (ক) বিসিকের অভ্যন্তরে সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে রা¯তার পার্শ্বে অবৈধভাবে গড়ে উঠা দোকানপাঠ উচ্ছে করা। (খ) বিসিকের অভ্যন্তরে রাত্রিকালে রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা। (গ) বিসিক হোসিয়ারী শিল্পনগরী সংলগ্ন পুলিশ ফাঁড়ির পশ্চিম পার্শ্বে নির্মিত সংযোগ রাস্তাটি সংস্কার করা। (ঘ) স্থাপিত শিল্প ইউনিটগুলোর অনুক‚লে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা। (ঙ) সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে বিসিক হোসিয়ারী শিল্পনগরীর চার পার্শ্বে সীমাপ্রাচীর স্থাপনের ব্যবস্থা করা। (চ) শিল্প উদ্দ্যোক্তাগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা বিধানকল্পে শিল্পনগরী প্রকল্পে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন। উলে­খ্য যে, পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের জন্য উক্ত প্রকল্পে ২০০০ বর্গফুটের জমি (বিÐ২২২) প্রদানের বিষয়টি বিসিককে অবহিত করা হয়েছে। ১৪। হোসিয়ারী শিল্পনগরী স¤প্রসারণঃ অধিগ্রহনকৃত ৫৮.৫২ একর জমির ইকুইটি প্রদানকারী সকল উদ্দোক্তা -গনকে জমি বরাদ্দ দেয়া স¤ভব নয় বিধায় এসোসিয়েশনের অনেক সদস্য এবং নতন আগ্রহী উদ্দ্যোক্তা-গনকে প্লট বরাদ্দ প্রদানের লক্ষ্যে অধিগ্রহনকৃত জমির উত্তর পার্শ্বে আরও ৩০.৬৫ একর জমি অধিগ্রহন করে প্রকল্প স¤প্রসারণের প্র¯াব করা হয়। এ প্রকল্পে জমি অধিগ্রহন ও যাবতীয় অবকাঠামো উন্নয়ন বাবদ ৪,৮৫০.০০ লক্ষ টাকার প্রকল্প ছক প্রনয়ন করা হয়। প্রকল্প ছকে বর্ণিত ৪৮৫০.০০ লক্ষ টাকার ৮০% অর্থাৎ ৩৮৮০.০০ লক্ষ টাকার ১২৭০.০০ লক্ষ টাকা এসোসিয়েশন এককালীণ পরিশোধ করবে এবং ২৬১০.০০ লক্ষ টাকা উদ্দ্যোক্তাগন জমির উন্নয়ন বাবদ ৪ কি¯িতে পরিশোধ করবে। অবশিষ্ট সুদমুক্ত ঋণ হিসাবে ২০% অর্থাৎ ৯৭০.০০ লক্ষ টাকা প্রকল্প মেয়াদের পর ৫ বছরে ৫টি সমান কি¯িতে পরিশোধ করবে। প্রকল্পের ছক অনুযায়ী স¤প্রসারন প্রকল্পে কাঠা প্রতি জমির ক্ষতি পরন মুল্য ৮৭,৫৮৬/= টাকা, কি¯িতে পরিশোধযোগ্য ১,৮০,০০০/= টাকা এবং সুদ মুক্ত ঋণ হিসাবে ৬৬,৮৯০/= টাকা সর্বমোট কাঠা প্রতি ৩,৩৪,৪৭৬.০০ টাকা পরিশোধের জন্য বিসিক ও বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের মধ্যে একটি প্রকল্প ছক তৈরী করা হয়েছিল। প্রকল্প ছকের নীতিমালা অনুযায়ী বিসিক হতে প্রেরিত পত্রের মর্মানুযায়ী এসোসিয়েশনকে জমির নির্ধারিত মুল্য প্রদানের পত্র প্রেরন করার পর নির্দ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমির মুল্য প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় প্রকল্পটি আপনা আপনি বাতিল হয়ে যায়। ১৫। হোসিয়ারী শিল্প জাতীয় ঃ ক্রমবিকাশমান হোসিয়ারী শিল্পের স¤প্রসারন, উন্নতি, গতিশীল উৎপাদন অর্থনৈতিক উন্নয়নে কতটুকু তথা রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন অবকাঠামো সুদৃঢ় ও মানুষের জীবন যাত্রার অবদান রাখতে পেরেছে মানউন্নয়ন সাধনে হোসিয়ারী শিল্প ১৯৫০ইং সন হতে গুরূত্বপর্ন ভ‚মিকা বলে আপনি মনে করেন। পালন করে আস্ছে। দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো সুদৃঢ় করতে হলে রপ্তানি বৃদ্ধি করে আমদানি ব্যয় হ্রাস করা হলে দেশের আপামর জনসাধারনের মাথাপিচু আয় বাড়বে এবং মাথাপিচু আয় বৃদ্ধি পেলে জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন এবং অন্যদিকে দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো মজবুত হবে। রাষ্ট্রীয় ও অর্থনৈতিক তথা বাংলাদেশের জনসাধারনের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে তদানিšতন পর্ব পাকি¯ান আমল হতে হোসিয়ারী শিল্প যথেষ্ট গুরূত্বপর্ন ভ‚মিকা পালন করে আসছে। হোসিয়ারী শিল্পে যুগপোযোগী বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনে এ শিল্প অনেক প্রসার লাভ করেছে। উৎপাদিত গেঞ্জি, জাইংগা, মোজা, মাফলার, টুপি, বেবীসেট দেশের আপামর জনসাধারনের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচেছ। ১৬। এফবিসিসিআই’র স¤পর্কেঃ বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন দেশের বিভিন্ন খাতভ‚ক্ত ব্যবসায়ীদের আপনার মতামত কি ? শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এর ’’এ শ্রেনীর এসোসিয়েশন’’ জেনারেল বডির সদস্য। এফবিসিসিআই জেলা ভিত্তিক বিভিন্ন চেম্বার ও এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিত্বকারী শীর্ষ বাণিজ্য সংস্থা। হোসিয়ারীখাতভ‚ক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্বকারী বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে আমরা বিভিন্ন সময়ে এফবিসিসিআইএ’র সাথে পারস্পরিক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সৃষ্ট সমস্যা ও জটিলতা নিরসন করতে সক্ষম হই। ব্যবসার উন্নয়ন ও স¤প্রসারন এবং বিভিন্ন খাতভ‚ক্ত সকল ব্যবসায়ী স¤প্রদায়ের সার্বিক উন্নয়নে এফবিসিসিআইএ’র ভ‚মিকা অত্যন্ত গুরূত¦পূর্ন ও অর্থবহ বলে আমি মনে করি। উলে­খ্য যে,শিল্প উদ্দ্যোক্তাগণের স্বার্থে এবং খাত ভিত্তিক ব্যবসা উন্নয়নের জন্য এসোসিয়েশনের বিভিন্ন কার্য্যক্রমগুলো সংকুচিত না করে সরকারীভাবে কার্য্যক্রমকে আরও স¤প্রসারিত করা হলে হোসিয়ারী খাতভিত্তিক বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভ‚মিকা পালনে সক্ষম হবে।

Image 404

Lorem ipsum dolor sit amet, consetetur sadipscing elitr, sed diam nonumy eirmod tempor invidunt ut labore et dolore magna aliquyam erat, sed diam voluptua.

Image 404

consetetur sadipscing elitr, sed diam nonumy eirmod tempor invidunt ut labore et dolore magna aliquyam erat, sed diam voluptua.

Image 404

dolor sit amet, consetetur sadipscing elitr, sed diam nonumy eirmod tempor invidunt ut labore et dolore magna aliquyam erat, sed diam voluptua.